বনিক বার্তা । বদরুল আলম ও সুজিত সাহা (পর্ব-১)

কভিডের অভিঘাত কাটিয়ে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যেই শুরু হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। স্থবিরতা কাটালেও স্থিরতা ফিরছে না দেশের অর্থনীতিতে। জ্বালানি বাজারের অস্থিতিশীলতা এরই মধ্যে দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। স্থিতিশীল নয় খাদ্যপণ্যের বাজারও। জ্বালানি ও খাদ্যদ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণকেই আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ মুহূর্তে দেশের শিল্প খাতে বড় উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি। শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, সরকারিভাবে জ্বালানির মূল্য বাড়ানো হলে কারখানা সচল রাখাই দুরূহ হয়ে পড়বে। এ উদ্বেগ সব শিল্প খাতেই কম-বেশি রয়েছে। বিশেষ করে বস্ত্র, সিরামিক ও ইস্পাতের মতো ভারী শিল্পে এ নিয়ে শঙ্কা সবচেয়ে বেশি।

আবার খাদ্যের সরবরাহ নিয়ে সংশয় রয়েছে খোদ সরকারের মধ্যেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে খাদ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীলতা ফেরাতে জোর দেয়া হচ্ছে আমদানি বৃদ্ধির ওপর। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, আগামী অর্থবছরে দেশে এক কোটি টনের বেশি খাদ্য আমদানি করতে হবে। বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে আমদানির পরিমাণ ইউএসডিএর প্রক্ষেপণকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দেশের জ্বালানি খাতের মহাপরিকল্পনার বড় একটি অংশ সাজানো হয়েছে আমদানীকৃত এলএনজিকে ঘিরে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার জোরালো হয়ে ওঠার প্রেক্ষাপটে গত বছরের শেষার্ধে স্পট মার্কেটে পণ্যটির দাম বাড়তে থাকে। একসময় পণ্যটির দাম প্রতি এমএমবিটিইউ ৫৫ ডলারের ওপরে উঠে যায়। চলতি বছরের শুরুর দিকে জ্বালানিটির বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরার কিছুটা লক্ষণও দেখা যায়। এর মধ্যে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হলে বৈশ্বিক জ্বালানির বাজার ব্যাপক অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। গ্যাসের দামও ব্যাপক হারে বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ৮০ ডলার ছাড়িয়ে যায়।

দর সংশোধন হয়ে সেখান থেকে কিছুটা কমে এলেও বাজার পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠানগুলোর পূর্বাভাস ছিল, চলতি বছরে স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে রাশিয়ার জ্বালানি বিপণন কৌশলের কারণে পূর্বাভাসটির তেমন কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। রুশ পেমেন্ট কৌশলে ইউরোপীয় দেশগুলো অন্য স্থান থেকে গ্যাস ক্রয়ের পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়। একই সঙ্গে ইউরোপে গ্রীষ্ম মৌসুম শুরু হওয়ায় এখন গ্যাসের চাহিদাও কমেছে। এর ধারাবাহিকতায় এশিয়ার এলএনজি বাজারে পণ্যটির দামও এখন কমছে।

এলএনজির দাম কমলেও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল, কয়লাসহ অন্যান্য জ্বালানিপণ্যের বাজার এখনো মারাত্মক অস্থিতিশীল। এ মুহূর্তে পশ্চিমা দেশগুলোর রাশিয়ার বৈরিতার বড় একটি ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে জ্বালানিপণ্যের বাজার। সে হিসেবে সার্বিক জ্বালানি বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না বাজার পর্যবেক্ষকরা। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে অস্থিতিশীলতা দীর্ঘায়িত হয়ে ওঠার মতো সব ধরনের অভ্যন্তরীণ ও বহিঃউপাদান বাজারে উপস্থিত। সেক্ষেত্রে সামনের দিনগুলোয়ও জ্বালানি খাতে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার ওপর চাপ অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জ্বালানি বাজারের অস্থিতিশীলতার মধ্যে বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ বজায় রাখাকেই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে সরকার। দেশে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারের অস্থিতিশীলতার প্রভাব নিয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বণিক বার্তাকে বলেন, বৈশ্বিক জ্বালানির বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকলে জ্বালানি খাতে তার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। বিষয়টি সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ পাওয়ার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের প্রকল্পগুলোয়ও এর প্রভাব রয়েছে। তবে এখন আমরা বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিয়ে কাজ করছি। আগামী অর্থবছরে এটিই আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।

জ্বালানি বাজারের অস্থিতিশীলতার কথা উল্লেখ করে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। এর বিরোধিতা করে ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ সংকট রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থানীয় শিল্পের সক্ষমতার ওপরই বেশি জোর দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ বা গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে স্থানীয় শিল্পগুলোর জন্য তা আত্মঘাতী হয়ে দাঁড়াবে। কর্মসংস্থানসহ সার্বিক অর্থনীতিকেই তা মারাত্মকভাবে বিপন্ন করে তুলবে।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, মহামারীর আঘাত কাটিয়ে অর্থনীতি যখন কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে, ঠিক সে মুহূর্তেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি আরেকটি বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্যের দাম বাড়ছে। মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। ফ্রেইট চার্জ বৃদ্ধি পাওয়ায় কাঁচামালের আমদানি ব্যয়ও বেড়েছে। এর মধ্যে আবার গ্যাসের দাম ১৩২ গুণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে সুতার উৎপাদন ব্যয় বাড়বে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা টিকতে পারব না।

প্রতিবারই বাজেটে খাদ্যনিরাপত্তা বৃদ্ধিতে কৃষি খাতের উন্নয়নে বিশেষ নজর দেয়া হয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আসন্ন বাজেটেও বিশেষ মনোযোগ থাকছে খাদ্যনিরাপত্তার ওপর। তুলনামূলক অধিক জনসংখ্যার পাশাপাশি আমদানিনির্ভরতার কারণে আসন্ন অর্থবছরে খাদ্যশস্যের বাজার নিয়েও রয়েছে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা। সংকট মোকাবেলায় বাজেটেই বিশেষ পরিকল্পনা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী ও খাতসংশ্লিষ্টরা।

একসময় চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। যদিও গত কয়েক বছরে আমদানিনির্ভরতা বেড়েছে। গম, চিনি, ভোজ্যতেল ও ডালের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ কমবেশি ৯০ শতাংশ আমদানিনির্ভর। চলমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতায়ও দেশের খাদ্যশস্যের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। আসন্ন বাজেটে খাদ্যশস্য আমদানি খাতে শুল্ক-কর হারের পুনর্বিন্যাস ছাড়া এ সংকট মোকাবেলা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, প্রধান প্রধান খাদ্যশস্যের ক্ষেত্রে আমদানিনির্ভরতার কারণে বৈশ্বিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দীর্ঘমেয়াদি সংকটের মধ্যে পড়বে বাংলাদেশ। বিশ্ববাজারে ভোগ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির ধারা শিগগিরই পরিবর্তন হবে না। আসন্ন বাজেটে সরকারিভাবে আমদানির সুযোগ রাখা ছাড়াও খাদ্যশস্য উৎপাদন খাতের জন্য সুবিধা বাড়ানো উচিত। যুদ্ধ পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে বাংলাদেশকেও এর জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালজুড়েই খাদ্য মূল্যস্ফীতির ওঠানামা ছিল। তবে বছরের শেষ প্রান্তে এসে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে খাদ্য, পানীয় ও তামাকের সমন্বিত মূল্যস্ফীতি ২০২১ সালের আগস্টে ছিল ৫ দশমিক ১৬ শতাংশ। সেখান থেকে ক্রমে বেড়ে গত ডিসেম্বরে তা দাঁড়ায় ৫ দশমিক ৪৬ শতাংশে।

দেশের ভোজ্যতেলের বাজার প্রায়ই অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে দুনিয়াব্যাপী খাদ্যশস্যের মূল্যবৃদ্ধি ছাড়াও রফতানি নিষেধাজ্ঞার হিড়িক লেগেছে। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে আমদানিনির্ভর দেশগুলো। বাংলাদেশেও বিষয়টি এখন খাদ্যনিরাপত্তার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসন্ন বাজেটে এর প্রতিফলন না থাকলে আগামী অর্থবছরে খাদ্যনিরাপত্তা দেশের অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। এজন্য আমদানি ও সরকারি মজুদের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়েও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের নীতিসহায়তা দেয়ার ওপর জোর আরোপ করছেন তারা।

বৈশ্বিক গমের বাজারের ২৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে রাশিয়া ও ইউক্রেন। এছাড়া ভুট্টা উৎপাদনেও দেশ দুটির অবস্থান সামনের সারিতে। যুদ্ধের কারণে দেশ দুটি থেকে রফতানি এখন এক প্রকার বন্ধ। যুদ্ধের আগে এ দুই দেশই ছিল বাংলাদেশের আমদানীকৃত গমের বড় উৎস। প্রতিবেশী ভারতও সম্প্রতি গম রফতানি বন্ধ ঘোষণা করেছে। যদিও প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য রফতানি উন্মুক্ত রেখেছে ভারত। এর পরও দীর্ঘমেয়াদে বিষয়টি নিয়ে বড় শঙ্কায় ভুগছেন সংশ্লিষ্ট সবাই।

বৈশ্বিক ভোজ্যতেল ও ডালশস্যের বাজারেও রাশিয়া ও ইউক্রেনের বড় নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। যুদ্ধে এ দুই ধরনের খাদ্যপণ্যের বাজারেও সরবরাহ চেইনে বড় ওলটপালট ঘটেছে। দেশে ভোজ্যতেলের মধ্যে পাম অয়েলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। পণ্যটির শীর্ষ সরবরাহকারী দেশ ইন্দোনেশিয়া এরই মধ্যে এক দফায় পাম অয়েল রফতানি বন্ধ ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি দেশটি রফতানি উন্মুক্ত করলেও যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ভোজ্যতেলের বাজার নিয়েও স্বস্তি নেই ভোক্তা-ব্যবসায়ী ও বাজার বিশ্লেষকদের।

চিনির ক্ষেত্রেও ব্রাজিল ও ভারত পণ্যটি রফতানি করছে নিয়ন্ত্রিতভাবে। বাংলাদেশে পণ্যটির মোট চাহিদার ৯০ শতাংশই পূরণ হয় আমদানির মাধ্যমে। পণ্যটির বাজার ঠিক রাখতে স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধিসহ আসন্ন বাজেটে আমদানিতে শুল্কহার কমানো জরুরি বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। 

কাস্টমস, ব্যবসায়ী ও সরকারি বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রায় ৭০ লাখ টন গমের চাহিদা থাকলেও সাদ-আট লাখ টন দেশে উৎপাদন হয়। ২৫ লাখ টন ভোজ্যতেলের মধ্যে ২২-২৩ লাখ টনই আমদানিনির্ভর। ১৮-২০ লাখ টন চিনির চাহিদার প্রায় শতভাগই এখন আমদানি হচ্ছে। অন্যদিকে দেশে চালের চাহিদা আড়াই কোটি টনের বেশি হলেও সাম্প্রতিক সময়ে আমদানির প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে হাওরে বন্যার কারণে উৎপাদন কম হওয়ায় ১৫-২০ শতাংশ চাল আমদানি করতে হবে। এজন্য আসন্ন বাজেটে প্রধান প্রধান খাদ্যশস্য উৎপাদন, আমদানির ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা রাখতে প্রয়োজনে ভর্তুকিসহ ডলার সংকট মেটানোয় বিশেষ মনোযোগ দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা।

খাতুনগঞ্জের খাদ্যপণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এমএইচ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে চাইলেই বিশ্ববাজার থেকে কম দামে পণ্য ক্রয়ের চেষ্টা করা বৃথা। এর চেয়ে নিজেদের শুল্ক কাঠামোকে সরলীকরণের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি ধরে রাখা সম্ভব। ভারতসহ বিভিন্ন বৃহৎ জনগোষ্ঠীর দেশগুলো শুল্ক কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে। পাশাপাশি অতি জরুরি নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রে বন্দর ও কাস্টমস চার্জ কমানো বা মওকুফের মাধ্যমে খাদ্যপণ্যের দাম অন্তত ছয় মাস স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হবে। বাজেটে এ বিষয়ে মনোযোগ দেয়া জরুরি।

খাদ্যের ক্ষেত্রে দাম নিয়ন্ত্রণকেই মূল সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়বে স্থানীয় বাজারে। এছাড়া বিনিময় হারও একটি বড় সমস্যা। এর কারণে অনেকেই বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত মূল্যে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছেন না। এর প্রভাব পড়ছে খাদ্যের দামে। এছাড়া সিন্ডিকেট ও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজির কারণেও দাম বাড়ার অভিযোগ উঠছে অহরহই।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, জ্বালানিতে ভর্তুকি, মূল্য সমন্বয় ও সরবরাহের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা-অনিশ্চয়তা রয়েছে। সবটা মিলে আমার মনে হয়, এটি আগামী অর্থবছরে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হবে। জ্বালানি সরবরাহ ও মূল্য—দুটোই বড় চ্যালেঞ্জ হবে। খাদ্যের ক্ষেত্রেও চ্যালেঞ্জটা মূলত হবে দামে। সরকারকে অবশ্যই আমদানি সময়মতো ও প্রয়োজনমতো করতে হবে। টিসিবির মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে সরবরাহ করে বাজারে চাহিদার চাপ কমানোয় উদ্যোগী হতে হবে। দরকার হলে শুল্ক সমন্বয়ের মতো পদক্ষেপ নিতে হবে। এগুলোর মাধ্যমেই পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। মানুষ যেন কর্মসংস্থান সৃজন করে আয় করতে পারে, সেটির ব্যবস্থা করতে পারলে ক্রয়ক্ষমতার ওপর চাপ আরেকটু কমবে। সামষ্টিক অর্থনীতির ব্যবস্থাপনার ওপরও নির্ভর করবে সার্বিক পরিস্থিতি।

DISCLAIMER : Views expressed above are the author's own. The contents provided here are only for educational assistance & information purposes only. Information is provided without warranty and is to be used at the risk of the reader. All trademarks, logos and copyright issues are property of their respective owners. The creator of this page takes no responsibility for the way you use the information provided on this site