প্রাণঘাতী করোনার পর এখন আরেক মহামারী হানা দিয়েছে আফ্রিকান দেশ নাইজেরিয়াতে। দেশটির এক প্রদেশে ইবোলার অনুরূপ একটি তীব্র রক্তক্ষরণজনিত রোগ লাসা জ্বর ছড়িয়ে পড়েছে। এই ধরনের জ্বরে রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা কমে যায় ও এর জমাট বাঁধার ক্ষমতা হ্রাস পায়। যার ফলে রোগীর অভ্যন্তরীণ রক্তপাত শুরু হয়। আক্রান্ত হওয়ার কিছু দিন পর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে বলেও জানা গেছে। খবর আল-জাজিরার।

যদিও সংক্রামিতদের ৮০ শতাংশ রোগী এই ভাইরাসে খুব বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে না। এছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই রোগ লক্ষণহীন থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে মৃত্যুর হার ১৫ শতাংশ। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে, মাথা ও পেশী ব্যথা, গলা ব্যথা, বমি বমি ভাব ও জ্বর। 

প্রাথমিকভাবে, এগুলো এই অঞ্চলের একটি সাধারণ রোগ ম্যালেরিয়ার লক্ষণ থেকে আলাদা করা যায় না। নাইজেরিয়ার ওও শহরের ফেডারেল মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতালের ল্যাবরেটরি রাজ্যে একমাত্র যারা লাসা ডায়াগনস্টিক রক্ত পরীক্ষা করে। এর ফলাফল শুধুমাত্র দুই দিন পরে পাওয়া যায়।এই সকল কারণে কেউ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে নাকি তা অনেক দেরিতে জানা যায়। ফলে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে পরে।  

ওও নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজা থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে একটি কৃষি বাজার কেন্দ্র। লাসা প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল এই শহর যা এই বছরের শুরুতে এই রোগে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এই পর্যন্ত এই ভাইরাসে এই শহরে ১৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।  

নাইজেরিয়ার এই অংশে মানুষ লাসা ভাইরাসকে করোনা ভাইরাস থেকে অনেক বেশি ভয় পায়।  

হাসপাতালের ইনফেকশন কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার অনুসারে, অনডো প্রদেশে যেখানে ওও অবস্থিত সেখানে ২০২০ সাল থেকে লাসায় আক্রান্ত ১৭১ জনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। যেখানে করোনায় ৮৫ জন মারা গেছে।