বিশ্বে প্রতিদিন ১৯ হাজার ৭০০ জন ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে। সে হিসাবে প্রতি চার সেকেন্ডে মারা যাচ্ছেন একজন। এ অবস্থায় ‘বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা সংকটের অবসান ঘটাতে’ আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে প্রায় আড়াই শ’ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও)। খবর-এএফপি।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) অক্সফাম, সেভ দ্য চিলড্রেন ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালসহ পঁচাত্তরটি দেশের ২৩৮টি সংস্থা এ আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের জন্য নিউইয়র্কে জড়ো হওয়া বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি দিয়েছে এনজিওগুলো।দিন দিন ক্ষুধার মাত্রা আকাশচুম্বী হওয়ায় চিঠিতে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। চিঠিতে বলা হয়, এটি বিস্ময়কর! পৃথিবীর সাড়ে ৩৪ কোটি মানুষ বর্তমানে তীব্র ক্ষুধার সম্মুখীন হচ্ছে। ২০১৯ সাল থেকে এ সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, একবিংশ শতাব্দীতে আর কখনও দুর্ভিক্ষ হবে না বলে বিশ্ব নেতারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অথচ সোমালিয়ায় আরও একবার দুর্ভিক্ষ আসন্ন। বিশ্বজুড়ে ৪৫টি দেশে পাঁচ কোটি মানুষ অনাহারের দ্বারপ্রান্তে। প্রতিদিন ১৯ হাজার ৭০০ জন ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে।

খোলা চিঠির অন্যতম স্বাক্ষরকারী ইয়েমেনের ফ্যামিলি কেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মোহান্না আহমেদ আলী এলজাবালি বলেছেন, এটি ভয়াবহ একটি সংকট। কারণ, ২১ শতকে কৃষি ও ফসল কাটায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। অথচ আমরা এখন দুর্ভিক্ষের কথা বলছি। এটি একটি দেশ বা একটি মহাদেশ সম্পর্কে নয়। ক্ষুধারও মাত্র একটি কারণ থাকে না। এটি সমগ্র মানবতার অবিচার বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, তাৎক্ষণিক জীবনরক্ষাকারী খাদ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা প্রদানে আমাদের আর এক মুহূর্ত অপেক্ষা করা উচিত নয়। লোকজন যাতে তাদের ভবিষ্যতের দায়িত্ব ও নিজেদের এবং পরিবারের জন্য খাদ্য সরবরাহ করতে পারে; আমাদের তা নিশ্চিত করতে কাজ শুরু করে দেওয়া প্রয়োজন বলে দাবি করেন তিনি।

এদিকে, একটি গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অপচয়কৃত খাবারের পরিমাণ নিজেদের জন্য আমদানি করা খাবারের তুলনায় অনেক বেশি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিবছর অন্তত ১৫ কোটি ৩০ লাখ টন খাদ্যশস্য অপচয় করে থাকে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অভিযোগ এই অপচয়ও বিশ্বে খাদ্যের অভাব তৈরির অন্যতম কারণ।