এবার বিনিয়োগ গুরুখ্যাত মার্কিন ধনকুবের ওয়ারেন বাফেটের ডাকা বার্ষিক মধ্যাহ্নভোজের নিলাম উঠেছে ১ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশের প্রায় ১৭৭ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৯৩ টাকা ধরে)। বাফেটের সঙ্গে এক বেলা খাওয়ার জন্য যিনি অকাতরে এত টাকা দিতে রাজি হয়েছেন, তিনি কিন্তু নিজের পরিচয় গোপন রেখেছেন। অতীতেও অনেকেই এভাবে নাম গোপন রেখে বাফেটের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ করেছেন। খবর রয়টার্সের।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান ই–বে গত শুক্রবার অনলাইনে বাফেটের সঙ্গে মধ্যহ্নভোজের নিলামের আয়োজন করে। সান ফ্রান্সিসকোভিত্তিক দাতব্য সংস্থা গ্লাইড ফাউন্ডেশনকে সহায়তা করতে প্রতিবছর এ নিলামের আয়োজন করা হয়।

বিনিয়োগ গুরুখ্যাত ওয়ারেন বাফেট যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)। ২০০০ সাল থেকে তাঁর সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের এ বার্ষিক নিলাম অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এ ধরনের ২১টি নিলাম হয়েছে। এসব নিলাম থেকে পাওয়া ৫ কোটি ৩২ লাখ ডলারের (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৯৫ কোটি টাকা) সবই দেওয়া হয়েছে দাতব্য সংস্থা গ্লাইড ফাউন্ডেশনকে। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর অবশ্য এ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়নি।

তবে এখন পর্যন্ত এবারের নিলামেই মধ্যহ্নভোজের সর্বোচ্চ দর উঠেছে। এর আগে ২০১৯ সালে ক্রিপ্টোকারেন্সি খাতের উদ্যোক্তা জাস্টিন সান সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ ৭০ হাজার ডলারে এ নিলাম জিতেছিলেন।

ই–বের একজন মুখপাত্র জানান, এ বছর দাতব্য প্রতিষ্ঠান গ্লাইড ফাউন্ডেশনকে সহায়তার জন্য তাঁদের ওয়েবসাইটে যতগুলো সেবা বা পণ্য নিলামে তোলা হয়, তার মধ্যে সবচেয়ে দামি হলো বাফেটের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের নিলাম।

৯১ বছর বয়সী বাফেটের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিতে এই বছরের নিলাম বিজয়ী তাঁর সঙ্গে আরও সাতজন অতিথিকে রাখার সুযোগ পাবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনের স্মিথ অ্যান্ড উলেনস্কি রেস্তোরাঁয় আয়োজন করা হবে মধ্যাহ্নভোজ। এ সময় বাফেট প্রায় সব বিষয়েই কথা বলবেন। তবে তিনি নতুন করে কোথায় বিনিয়োগ করবেন, এ বিষয়ে কিছু জানাবেন না।

নিলাম শেষ হওয়ার পরে বাফেট এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই নিলাম ও মধ্যাহ্নভোজের মাধ্যমে আমি সারা বিশ্বের অনেক আকর্ষণীয় লোকের সঙ্গে দেখা করতে পেরেছি। এটা অত্যন্ত আনন্দের। আর আমার সঙ্গে দেখা করা ব্যক্তিরাও মনে করেন যে তাঁদের টাকা খুব ভালো খাতে ব্যবহার হচ্ছে।’

গ্লাইড ফাউন্ডেশন দরিদ্র ও গৃহহীন মানুষ ছাড়াও মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনে সাহায্য করে। সংস্থাটি দুস্থ মানুষদের খাবার প্রদান ও থাকার জায়গা দেওয়ার পাশাপাশি এইচআইভি ও হেপাটাইটিস সির পরীক্ষাও করায়। পাশাপাশি চাকরির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি।

বাফেটের প্রথম স্ত্রী সুসান তাঁকে এ দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। সুসান এ দাতব্য সংস্থার স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন। তারপর থেকে বাফেট গ্লাইড ফাউন্ডেশনকে অর্থায়নের জন্য নিলামের

আয়োজন করে আসছেন। সুসান বাফেট ২০০৪ সালে মারা যান।

ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের সপ্তম শীর্ষ ধনী ওয়ারেন বাফেট। তাঁর সম্পদের মোট মূল্য এখন ৯ হাজার ৩৪০ কোটি ডলার।