Print
Hits: 989

চাকরির ভাইভা প্রস্তুতি ও আদব কেতা:: সুপার টিপস । চাকরি ভাইভা ভা জবস ইন্টারভিউ এর ভালো বাংলা প্রতিশব্দ হলো চাকরির সাক্ষাৎকার। আমাদের চাকরির ভাইভা বোর্ড ফেস করতে হবে। এমনটি শুনলেই অনেকের শরীরে জ্বর চলে আসে। অর্থ্যাৎ অতিরিক্ত টেনশন কাজ করে। যা মোটেই কাম্য নয়।

দেখুন ইন্টারভিউ কিন্ত একপক্ষের নয়। এটি উপভয় পক্ষের। যে প্রতিষ্ঠান আপনাকে চাকরি দেবে তাঁরা যেমন অনেকের মধ্যে আপনাকে বেছে নেবে।

তেমনিভাবে, আপনি এই প্রতিষ্ঠানই মনে মনে চেয়েছিলেন কি না? তাও দেখে নেবেন। ধরুন, আপনি বেকার কিন্তু আপনি স্নাতক বা স্নাতকোত্তর সম্পন্ন একজন ব্যক্তি। আপনাকে নিচের গ্রেডে চাকরি দিলে তো আপনি নেবেন না, তাই না ?

অথবা, আপনি একটি প্রতিষ্ঠানে জব করেন। আপনাকে তুলনামূলক আরো ছোট প্রতিষ্ঠানে এবং বেতন ও সুবিধাদি কম এমন প্রতিষ্ঠানে জব দিলে আপনি কী যাবেন? মোটেও না। তাই ইন্টারভিউ উওভয় পক্ষের, এতে বিচলিত হওয়ার কিছু নাই।

এবার দেখা যাক, ভাইভা বোর্ডে কি কি করা যাবে না:

১) পুরুষদের ক্ষেত্রে নতুন জামা বা প্যান্ট  মহিলাদের ক্ষেত্রে নতুন শাড়ি যা ভাইভার দিনই প্রথম পরা হয়েছে, এটি করা যাবে না। নতুন কাপড় পরতে হলে আগের দিন ট্রায়াল করে নেবেন। বাড়িতে একটু হাঁটাহাঁটিও করে নেবেন ।

২) ভাইভার জন্য ভেতরে ডাকার সাথেই নিজে থেকে চেয়ারে বসতে যাবেন না। এখানে আপনার ধৈর্য্যের পরীক্ষাও নেয়া হতে পারে। বসতে বললে অথবা অনুমতি নিয়ে বসুন।

৩) বসার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখুন আপনার পিঠ যেন চেয়ার থেকে দূরে না থাকে; আপনার পিঠ চেয়ারের সাথে আলতোভাবে স্পর্শ করে বসুন। এতে আপনি কথা বলার সময় আত্মবিশ্বাস পাবেন।

৪) অতিরিক্ত চাপ বা স্ট্রেস নেবেন না! মাথায় রাখুন, আপনাকে কীভাবে স্ট্রেস কমানো যায় তার উপর প্রশ্নও করা হতে পারে। কেননা; এখনকার কর্পোরেটরা প্রচুর পরিমাণে স্ট্রেসের মধ্যে থাকে।

৫) কথা বলার সময় নিচে বা অন্যদিকে তাকাবেন না। যিনি প্রশ্ন করেছেন, তাঁর চোখে চোখ রেখে কথা বলুন। ভাইভা বোর্ডে একাধিক ব্যক্তি উপস্থিত থাকলে কথা বলার সময় তাঁদের দিকেও খেয়াল করুন।

৬) অতিরিক্ত কথা বলতে যাবেন না। টু দ্য পয়েন্ট থাকুন।

৭) প্রশ্ন না বুঝে কথা বলতে যাবে না। প্রয়োজনে জিজ্ঞাসা করে নিন।

৮) অধিক গুরুত্ত্বপূর্ণ হলো, কোন প্রশ্ন বা বিষয় জানা না থাকলে বানিয়ে বানিয়ে বলতে যাবেন না।

৯) প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে এমন ভাব করবেন না, যে আগে জানতেন-এই মূহুর্তেই মনে হচ্ছে না। মাথা চুলকাবেন না।

১০) চাকরিরত হলে পূর্বের প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তি ও অধঃস্তনদের সম্পর্কে নেগেটিভ কোন ধারনা দেবেন না।  

চাকরি ভাইভা প্রস্তুতি: কি কি বিষয় জেনে যাওয়া উচিৎ:

১) আপনার নামের অর্থ জেনে যাবেন। কোন প্রেক্ষাপটে বাবা আপনার এমন নাম রেখেছিলেন- তা জানা থাকলে আরো ভালো হয়।

২) ভাইভা বা ইন্টারভিউ এ যাওয়ার আগে অবশ্যই জাতীয় পত্রিকার প্রধান প্রধান শিরোনাম দেখে যাবেন। পত্রিকার বক্স নিউজ ও সম্পাদকীয় পড়ে নেবেন।

৩) বাংলা ও আরবি তারিখ সনসহ দেখে যাবেন।

৪) আপনার জেলা ব্র্যান্ডিং কি? জাতীয় বা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আপনার জেলা কেন পরিচিত- তা জেনে যাবেন।

৫) আপনার উপজেলা কেন আপনার কাছে বিখ্যাত?

৬) বাংলাদেশের স্থপতি ও বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশদ জেনে যাবেন। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিগুলো জানা দরকার।

৭) অন্যের থেকে আপনি কেন আলাদা-এই বিষয়টির উপর ৫টি বাক্য প্রস্তুত রাখবেন। মাথায় রাখবেন, এর মধ্যে যেন সময়ানুবর্তিতা থাকে। আপনার ডাইভারসিটি বা বৈচিত্রতা সম্পর্কে বলতে পারেন।

চাকরি ভাইভা প্রস্তুতি: আরো যে প্রশ্ন করা হতে পারে:

আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হতে পারে, আপনি কীভাবে স্ট্রেস সামলান? বা অতিরিক্ত টেনশনের সময় নিজেকে ঠিক রাখেন। এক্ষেত্রে উত্তর হতে পারে; আমি বিকল্প চিন্তা করি। ঐ কাজ বাস্তবায়নে যা যা করা দরকার তাই করি। একই সময়ে অন্য আরেকটি কাজের উদ্যোগ নিই; শারীরিক ব্যায়াম করি।

চাকরিরত হলে আপনাকে প্রশ্ন করা হতে পারে, আপনি কেন প্রতিষ্ঠান বদলাতে চান? উত্তর হতে পারে, আপনি নতুন প্রতিষ্ঠানকে আপনার দক্ষতা ও যোগ্যতা দিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে আনতে চান। অথবা; নতুন প্রতিষ্ঠানে নিজেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে।

আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হতে পারে, কেন আপনার চাকরিটা দরকার?

এক্ষেত্রে কোন অসহায়ত্ত্বের কথা বা অযুহাত দেয়া যাবে না। পারিবারিক ক্রাইসিসের কথা জানানো যাবে না।

মনে রাখতে হবে, পৃথিবীর সকল মানুষই কোন না কোন ক্রাইসিসের মধ্যে আছে; শুধু ক্রাইসিসের মাত্রা ও তীব্রতা ভিন্ন। এখানে উত্তর দেয়া যেতে পারে; কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান আপনাকে নিয়োগ দিলে তারা যথার্থ ব্যক্তিকেই নিয়োগ দিচ্ছে এটি প্রতীয়মান হবে। প্রতিষ্ঠান যা চাচ্ছে যেভাবে চাচ্ছে; আপনার মাধ্যমের তার শ্রী বৃদ্ধি হবে। একই সাথে এই প্রতিষ্ঠানে আপনি আপনার সর্বোচ্চটুকু দিতে চান।

চাকরি ভাইভা প্রস্তুতি: অনলাইন ভাইবা হলে যা করণীয়:

১) ক্যামেরা সর্বদা অন করে রাখবেন।

২) মাইক্রোফোন অফ করে রাখবেন প্রশ্ন করলে বা অনুমতি নিয়ে কথা বলার সময় মাইক্রোফোন অন করবেন।

৩) ল্যাপটপ হলে ভালো তবে মোবাইল ফোন হলে তা দৃঢ় কোন বস্তুর সাথে আটকিয়ে রাখবেন; যেন মোবাইল ফোন না নড়ে। ছোট ক্যামেরা স্ট্যান্ড টেবিলের উপর রাখার ব্যবস্থা থাকলে ভালো হয়।

৪) হেড ফোন থাকলে ভালো হয় (ইয়ার ফোন নয়); হেড ফোন আপনার স্মার্টনেস বৃদ্ধি করবে।

তবে হেড ফোন না থাকলে ইয়ার ফোন ব্যবহার করা যাবে।  

কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে আপনার সম্পর্কে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন প্রস্তুত করে রাখতে পারেন। সর্বদা নিজেকে স্বাভাবিক ও সাবলীল রাখতে হবে।

আপনার জন্য শুভ কামনা।  

 Posted onJuly 25, 2021 ByeduportoNo Commentson চাকরি ভাইভা প্রস্তুতি ও আদব কেতা