ব্যাংকিং পেশায় এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। তিনি ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী ছিলেন। ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডে যোগ দেওয়ার আগে মাহবুবুর রহমান ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী হিসেবেও কাজ করেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মোছাব্বের হোসেন

 প্রশ্ন-ব্যাংকে ভালো করতে গেলে কী কী স্কিল থাকতে হয়? কীভাবে এগুলোর চর্চা করা যেতে পারে?

উত্তর: ব্যাংকিং কোনো জটিল বিষয় নয়। এতে ভালো করতে গেলে ইতিবাচক মানসিকতা, আন্তরিকতা, কাজের প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে। যাঁরা গণিত ও বিজ্ঞানে ভালো, তাঁরা সাধারণত ভালো করে থাকেন। তাই বলে মানবিক বিভাগ থেকে পাশ করে ব্যাংকে ভালো করছে না, তা তো নয়। ব্যাংকের প্রধান সম্পদ হলো গ্রাহক। কোনো গ্রাহক এলে তাঁর সঙ্গে ইতিবাচক মনোভাব দেখাতে হবে। কোনো সমস্যা নিয়ে এলে নেতিবাচক কথা বলা যাবে না। গ্রহকের সমস্যা সমাধান করতে না পারলেও যদি সমাধানের চেষ্টা করেন, তাতেই তিনি সন্তুষ্ট হবেন। সমস্যার কথা না শুনেই যদি বিদায় করে দেন, সেই গ্রাহক আপনার কাছে আসবেন না। গ্রাহকই হলো ব্যাংকের দূত। তিনি ফিরে গিয়ে ব্যাংক সম্পর্কে ভালো কথা বললে তো অন্যরাও ওই ব্যাংকে আসবেন। কাজ শেষ করে ছুটিতে যাচ্ছেন, এমন সময় কোনো গ্রাহক এলে তাঁকেও সহজ সমাধান দিতে হবে। এসব সেবা দিতে হলে ব্যাংকের খুঁটিনাটি বিষয়ে দখল থাকতে হবে। গ্রাহক যদি দেখেন আপনি পর্যাপ্ত জানেন না আর সেবা দিতে পারছেন না, তাতে ব্যাংক সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা হবে। একজন কর্মীর সেবার মানের ওপরই গ্রাহকের সন্তুষ্টি নির্ভর করবে।

প্রশ্ন-যাঁরা ব্যাংকে কাজ করতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কি?

উত্তর: যাঁরা আসতে চান, তাঁরা নিজেদের কিছু দক্ষতা তৈরি করতে পারেন। যেমন যোগাযোগ দক্ষতা। বাংলা–ইংরেজিতে ভালো ভাবে কথা বলা । সমস্যা শোনার মানসিকতা তৈরি করা। যাঁরা ব্যাংকের চাকরি করছেন, তাঁদের কাজের ধরন সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যেতে পারে। এখানে দিনের একটা লম্বা সময় কাজ করার জন্য মানসিকভাবে তৈরি থাকতে হবে। আজকাল ডিজিটাল সেবার দিকেই মানুষের আগ্রহ। ব্যাংকের কাজও এখন তা–ই হচ্ছে । মানুষ ব্যাংকে না গিয়ে বাসায় বসে সেবা নিতে চাইছে। ব্যাংকে জ্যাম ঠেলে যেতে বা ব্যাংকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে চাইছে না। তাই তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে কিছু ধারণা চাকরিতে বাড়তি যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে। সহজ–সরল সাবলীলভাবে যোগাযোগ দক্ষতা সব সময় চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় ।

প্রশ্ন-ব্যাংকের চাকরির সুবিধা কী কী?

উত্তর: ব্যাংকের চাকরির সবচেয়ে ভালো সুবিধা হলো এখানে পেশাগত গতিপথ (career path) খুব পরিষ্কার। তারপর বেতনকাঠামো বেশ ভালো। নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার সুযোগ। অনেক ব্যাংকে থাকাতে সুযোগও অনেক বেশি। কাজের স্বাধীনতা আছে। নিজের দক্ষতা দেখিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে ব্যাংকের চাকরিতে। আছে বিভিন্ন ধরনের ঋণসুবিধা। চাকরি যাওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে ভালো কাজ করলে। সব মিলে তরুণদের জন্য ব্যাংকের চাকরি খুব ভালো একটি চাকরি।

সুত্র-প্রথম আলো