ভারত নারী দলের সর্বকালের সেরা পেসার ঝুলন গোস্বামী। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে দিয়ে দুই দশকের ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছের ঝুলন।

২০ বছর ধরে ভারতের নারী ক্রিকেটের পটপরিবর্তন হয়েছে অনেক। তবে তিনি ছিলেন অনেকটা বটবৃক্ষের মতো। এ জন্যই হয়তো দলের অনেকেই ভালোবেসে ডাকেন ‘ঝুলনদি’ বলে। তার বিদায়ী ম্যাচে জয় উপহার দিতে দলের সকলেই ছিলেন বদ্ধপরিকর। শেষ পর্যন্ত ম্যানকাডিং আউট করে ঝুলনকে শেষ ম্যাচে জয় উপহার দিয়েছে ভারত।

ঐতিহাসিক লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ঝুলন গোস্বামীর শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচে মাত্র ১৬৯ রানের পুঁজি পায় ভারত। এরপরও ১৬ রানের রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে তারা। তবে শেষ উইকেটটি ম্যানকাড করে নেওয়ায় আলোচনার জন্ম দিয়েছে এটি।

মাত্র ১৭০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ৬৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে কঠিন বিপদে পড়ে যায় ইংল্যান্ড। সেখান থেকে হাল ধরেন শার্লট ডিন। নিচের সারির ব্যাটারদের নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান তিনি। ১১৮ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে ফেলে ইংল্যান্ড। জয়ের জন্য তখনও বাকি ছিল ৫২ রান। শেষ ব্যাটার ফ্রেয়া ডেভিসকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যচ্ছিলেন শার্লট। দুজন মিলে ৮.১ ওভারে যোগ করে ফেলেন ৩৫ রান। দলীয় সংগ্রহ পেরিয়ে যায় দেড়শ রানের ঘর।

ইনিংসের ৪৪তম ওভারে ঘটে ম্যানকাডিংয়ের সেই ঘটনা। বোলিংয়ে ছিলেন দিপ্তী শর্মা। তিনি বোলিং মার্কে গিয়ে বল ছাড়ার আগেই পপিং ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যান শার্লট। যা দেখে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন দিপ্তী। রিপ্লে দেখে শার্লটকে রানআউটের সিদ্ধান্ত জানান থার্ড আম্পায়ার।

অনাকাঙ্ক্ষিত এ আউটে চোখের জলে মাঠ ছাড়েন ৪৭ রান করা শার্লট। অন্যদিকে দলের কিংবদন্তি ঝুলনের বিদায়ী ম্যাচে রোমাঞ্চকর জয়ের আনন্দে মাতে ভারত। এ জয়ের সুবাদে তিন ম্যাচের সিরিজটি ৩-০ ব্যবধানেই জিতে নেয় হারমানপ্রিত কৌরের দল।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে ভারতের পক্ষে দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন কেবল তিনজন ব্যাটার। সর্বোচ্চ ৬৮ রান করেন দিপ্তী। বাঁহাতি ওপেনার স্মৃতি মান্ধানা খেলেন ৫২ রানের ইনিংস। এছাড়া পূজা ভাস্ত্রাকার করেন ২২ রান। জীবনের শেষ ইনিংসে প্রথম বলেই আউট হয়ে যান ঝুলন।

তবে বল হাতে অবশ্য নিজের সামর্থ্যের পুরোটাই দেখিয়েছেন ৩৯ বছর বয়সী এ বাঙালি পেসার। দশ ওভারে তিন মেইডেনসহ মাত্র ৩০ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছেন ঝুলন। এছাড়া ১০ ওভারে ২৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেওয়া রেনুকা সিং জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।

২০ বছরের ক্যারিয়ারে টেস্টে ১২ ম্যাচে ৪৪ উইকেট, ওয়ানডেতে ২০৪ ম্যাচে ২৫৫ উইকেট ও টি-টোয়েন্টিতে ৬৮ ম্যাচে নিয়েছেন ৫৬ উইকেট। নারী টি-টোয়েন্টিতে সর্বকালের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী ঝুলন। আর কোনো বোলার ২০০ উইকেটও নিতে পারেননি।

বিদায়বেলায় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ঝুলন, ‘আমি বিসিসিআইকে ধন্যবাদ দিতে চাই। ধন্যবাদ দিতে চাই আমার সতীর্থ, কোচ, অধিনায়কসহ সবাইকে। আমাকে আজ এ সুযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। এটা সত্যিই আমার জন্য একটা বিশেষ মুহূর্ত। ’