প্রতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই পাঁচ মাস জরিমানা ছাড়া বার্ষিক আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া যায়। ৩০ নভেম্বর দেশে আয়কর দিবস হিসেবে পালিত হয়। এদিনই ব্যক্তি করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমার শেষ তারিখ। প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত আয়কর মেলায় করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন।

বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী যাদের ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর বা টিআইএন রয়েছে তাদের জন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক। তবে রিটার্ন দাখিল করলেই যে আয়কর দিতে হবে তা নয়। কারো আয় যদি করযোগ্য না হয় তাহলে কর দেওয়ার প্রয়োজন নেই, শুধু রিটার্ন জমা দিলেই হবে।তবে অনেকেই আয়কর রিটার্ন জমা দেন না সময়মতো। এড়িয়ে যান ঝামেলা মনে করে। তবে মনে রাখবেন এখন ঝামেলা মনে করে এড়িয়ে গেলেও পরে আরও বেশি ঝামেলায় পড়তে হতে পারে আপনাকে।

আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ৭৫ ধারা অনুসারে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ হলে তার উপর আয়কর অধ্যাদেশ এর ১২৪ ধারা অনুযায়ী জরিমানা, ৭৩ ধারা অনুযায়ী ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত সরল সুদ এবং ৭৩ক ধারা অনুযায়ী বিলম্ব সুদ আরোপযোগ্য হবে।

যেক্ষেত্রে করদাতা রিটার্ন দাখিলের জন্য সময়ের আবেদন করে উপ-কর কমিশনার কর্তৃক মঞ্জুরকৃত বর্ধিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করবেন, সেক্ষেত্রে করদাতার উপর জরিমানা আরোপ হবে না, তবে অতিরিক্ত সরল সুদ ও বিলম্ব সুদ আরোপিত হবে।

চলুন জেনে নেওয়া যাক আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে যেসব সমস্যায় পড়তে পারেন-

>> আয়কর রিটার্ন ঠিক সময়ে জমা দেন না তারা পরবর্তীতে কোনো ট্রেড লাইসেন্স করতে পারবেন না।

>> ধরুন, আয়কর ফাঁকি দিচ্ছেন দীর্ঘদিন। হঠাৎ প্রয়োজন হলো বিদেশ যাওয়ার। ভিসা সহজে মিলবে না আপনার। কেননা আয়কর জমা দেওয়ার সব তথ্যই আপনাকে সেখানে দাখিল করতে হবে।

>> আইন অনুযায়ী যদি কোনো ব্যক্তি সময়মতো আয়কর রিটার্ন দিতে ব্যর্থ হন, এক্ষেত্রে অধ্যাদেশ অনুযায়ী এক হাজার টাকা অথবা আগের বছরের ট্যাক্সের ১০ শতাংশ জরিমানা করা যাবে। এ দুটির ভেতরে যেটি পরিমাণে বেশি সেই অঙ্কটি পেনাল্টি হতে পারে।

>> কয়েক বছর ধরে যদি কেউ রিটার্ন দাখিল না করেন তাহলে ওই জরিমানা ছাড়াও যতদিন ধরে তিনি রিটার্ন দেননি ওই পুরো সময়ের দিনপ্রতি ৫০ টাকা করে জরিমানা হতে পারে।

>> পুরোনো করদাতা হলে আগের বছর যে পরিমাণ অর্থ আয়কর হয়েছে সেটিসহ ওই অর্থের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি দিতে হতে পারে।

>> যারা করযোগ্য হওয়ার পরও একেবারেই কর দেন না, তাদের ক্ষেত্রে, তিন ধরনের জরিমানা করা হয়। একটি হলো যে পরিমাণ কর বকেয়া হয়েছে সেটি ছাড়া আরও ২৫ শতাংশ বাড়তি জরিমানা করার বিধান রয়েছে।

>> দ্বিতীয়টি যে পরিমাণ কর বকেয়া হয়েছে তার ওপর ২ শতাংশ হারে মাসিক সরল সুদ। যে পরিমাণ কর বকেয়া হয়েছে তার সমপরিমাণ জরিমানা।

>> তৃতীয়টি হচ্ছে, যদি কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ী কর জমা না দেন তাহলে অনেক সময় তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সম্পদ জব্দ করা হতে পারে।

সূত্র-জাগোনিউজ২৪.কম

আরও পড়ুন

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট মাঝারি পর্যায়ের

মোবাইলে রফতানি আয় ও রেমিট্যান্স আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন

মাত্র ১৮ ডলার দিয়ে যেভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতির যাত্রা শুরু