বিশ্বের ৫৪টি উন্নয়নশীল দরিদ্র দেশ দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। উন্নত দেশগুলো জরুরি সহায়তা না দিলে এসব দেশ ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে দেউলিয়ায় পরিণত হবে। বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন কপ ২৭-এ দেওয়া এক ভাষণে জাতিসংঘ উন্নয়ন কার্যক্রমের (ইউএনডিপি) প্রধান আখিম স্টেইনার এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আখিম স্টেইনার বলেন, মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি সংকট ও ক্রমবর্ধমান সুদহার এমন পরিস্থিতি তৈরি করছে, যেখানে ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা দেশের সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। এটি দেশগুলোর জনগণের ওপর সম্ভাব্য বিপর্যয়কর প্রভাব বয়ে আনবে।

ভাষণে আখিম স্টেইনার বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের তালিকায় ৫৪টি দেশ রয়েছে (এসব দেশ ঋণখেলাপি হতে পারে)। দেশগুলোর অর্থনীতির ওপর যদি আরও ধাক্কা লাগে, সুদহার আরও বেড়ে যায়, ঋণ নেওয়া আরও ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে, জ্বালানির দাম, খাদ্যের দাম বাড়ে; তবে দেউলিয়া হওয়া প্রায় অনিবার্য হয়ে উঠবে এবং আমরা অনেক দেশকেই এই কাতারে দেখতে পাব।’

এটি একটি বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি করেছে উল্লেখ করে আখিম স্টেইনার বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার দিকে তাকালে দেখতে পাবেন, সেখানে প্রায় গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে এই সংকটের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে।’

মিসরের শার্ম-আল শেখ অবকাশযাপন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় স্টেইনার বলেন, এমন সমস্যা সামনে এসে দাঁড়ালে জলবায়ু সংকট সমাধান করা কঠিন হয়ে যাবে। এটি জলবায়ু কার্যক্রমে কোনোভাবেই সহায়ক হবে না। ঋণ দিয়ে এসব দেশের পাশে না থাকলে তারা জলবায়ু সংকট থেকে বের হতে পারবে না।

স্টেইনার আরও বলেন, ঋণের সমস্যা এখন অনেক উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য এত বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে যে ঋণসংকট মোকাবিলা করা জলবায়ু পরিবর্তন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা প্রকল্প ত্বরান্বিত করার একটি পূর্বশর্ত হয়ে উঠেছে।’

জলবায়ু সংকট এ সমস্যা আরও গভীর করবে বলে মনে করেন স্টেইনার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখন অত্যধিক উষ্ণতার মুখোমুখি রয়েছে। ধনী দেশগুলো দরিদ্র দেশগুলোকে অর্থায়ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু তারা সে প্রতিশ্রুতি এখনো রক্ষা করেনি। এতে এখন ঝড়, বন্যা, খরা ও দাবদাহ বাড়বে।

আরও পড়ুন

৮০০ কোটি ছুঁল বিশ্বের জনসংখ্যা, ভারতের অবদান সর্বাধিক

রয়টার্সের বিশ্লেষণ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন, দুই কারণে ওঠেনি রিপাবলিকান ‘লাল ঢেউ’

যে কারণে যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি আরবের সম্পর্ক এখনো অবিচ্ছেদ্য