দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে আগামী চার বছরে বহুদূর নিয়ে যেতে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়ছে। এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলেই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছানো যাবে। গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ। তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই দেশের তথ্যপ্রযুক্তি×খাতের সব ব্যবসায়ী সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আমাদের কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছি। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমরা একটি যুগোপযোগী এবং কার্যকর “আইসিটি ইকোসিস্টেম” গঠনের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়ে কাজ করেছি।’

আইসিটি বিভাগ আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে আগামী চার বছরের কর্মপরিকল্পনাকে ‘আইসিটি মাস্টারপ্ল্যান’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। এ পরিকল্পনায় রয়েছে চার বছরের মধ্যে একটি জাতীয়ভিত্তিক কলসেন্টার স্থাপন, বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ডেটা সেন্টার তৈরি, ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন, সারা দেশে দুই হাজার কম্পিউটার ও ভাষা ল্যাব স্থাপন, আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে সেবা চালু, ইনোভেশন-ডিজাইন-এক্সিলেন্স বিষয়ে একাডেমি গড়ে তোলা, কম্পিউটার কাউন্সিলের নাম বদলে আইসিটি কাউন্সিলে রূপান্তর, সফটওয়্যার সার্টিফিকেশন সেন্টার গড়ে তোলা, নতুন ব্যবসায় উদ্যোগের জন্য ইনকিউবেটর তৈরি, বৃহৎ উপাত্ত বিশ্লেষণের ব্যবস্থা ও টাইটানিয়াম ল্যাব স্থাপন করা হবে।
সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৩৪ হাজার তরুণ-তরুণীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ২০ হাজার পাবে বনিয়াদি প্রশিক্ষণ, ১০ হাজার শিল্পসংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ এবং চার হাজার জন পাবে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দেওয়ার প্রশিক্ষণ। প্রতিমন্ত্রী জানান, লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রকল্পের আওতায় ২৬ হাজার শিক্ষার্থীকে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলা গভনেট ও ইনফো সরকার প্রকল্পের আওতায় সারা দেশের প্রায় সব উপজেলাকে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করা হয়েছে।
জুনাইদ আহ্মেদ বলেন, ‘কোরিয়া সরকারের সহায়তায় সারা দেশের আইসিটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। এরই মধ্যে কোরিয়া সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটকে একটি অভিন্ন পোর্টালের আওতায় এনে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সরকারি ওয়েবপোর্টাল জাতীয় তথ্য বাতায়ন চালু করা হয়েছে।’
সারা দেশে আরও ১০টি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন করা হবে বলে উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী। যশোর হাইটেক পার্কের প্রথম পর্যায়ের কাজ আগামী মার্চে শেষ হবে বলেও জানানো হয়।
ঘোষণার ১০ মাস পরও ঢাকার কারওয়ান বাজারের জনতা টাওয়ারে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এখনো কেন চালু হয়নি, জানতে চাইলে জুনাইদ আহ্মেদ বলেন, ‘সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলছে। একেবারে বন্ধ রয়েছে, কথাটিও ঠিক নয়। জনতা টাওয়ারে এখন তিনটি প্রতিষ্ঠান পুরোপুরিভাবে কাজ করছে। আমরা মামলাটি লড়ছি।’ —রাহিতুল ইসলাম

Prothom-alo জানুয়ারি ১৩, ২০১৫