Spoken+Grammar Bundle

কাতার বিশ্বকাপের পূর্বে ক্লাবের জার্সিতে বেশ উজ্জ্বল ছিলেন লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেও পেনাল্টি থেকে করেছিলেন একটি গোল। যদিও দল জিততে না পারায় সেই গোলে খুশির চেয়ে আক্ষেপই বেশি ছিলো। মেক্সিকোর বিপক্ষে ম্যাচে সকল হতাশা ঝেড়ে ফেললেন এই ক্ষুদে জাদুকর। দুর্দান্ত গোলের সাথে আরও এক অ্যাসিস্টে দলকে এনে দিলেন স্বস্তির জয়।

মেক্সিকোর বিপক্ষে দূর্দান্ত পারফরম্যান্স করা মেসি রেকর্ড বুকে বেশ কয়েকবার লিখেছেন নিজের নামও। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে ডান দিক থেকে আনহেল ডি মারিয়ার পাসে বলটা বাম পায়ে নিয়ন্ত্রণে নিলেন লিওনেল মেসি। একটু জায়গা বানিয়ে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে বাঁ পায়ের নিখুঁত শট। ঝাঁপিয়ে বলের নাগাল পেলেন না মেক্সিকান গোলরক্ষক গিয়েরমো ওচোয়া।দূরপাল্লার শটে চমৎকার গোলটি করার পর সতীর্থের গোলেও অবদান রাখেন মেসি। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নেমে এনজো ফার্নান্দেজের করা গোলটিও ছিল দেখার মতো। মেসির পাস পেয়ে বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে এক ঝটকায় সামনের প্রতিপক্ষের বাধা এড়িয়ে নেওয়া শটে বল বাঁক খেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া ওচোয়াকে ফাঁকি দিয়ে চলে যায় কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায়। আন্তর্জাতিক ফুটবলে প্রথম গোলটি এর চেয়ে সুন্দর হয়তো হতে পারত না ২১ বছর বয়সী মিডফিল্ডারের জন্য।


তবে ম্যাচটি সবাই মনে রাখবে মেসির জন্যই। রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকা মাঠে যেমন আলো ঝলমলে পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন, গড়েছেন বেশ কয়েকটি রেকর্ডও।
মাঠে নেমেই একটি রেকর্ডে তিনি পাশে বসেন তারই স্বদেশী কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনার। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি ২১ ম্যাচ খেলার রেকর্ড এতদিন ছিল ২০২০ সালে ওপাড়ে পাড়ি জমানো ম্যারাডোনার।


সেখানে ভাগ বসালেন মেসি। গ্রুপের শেষ ম্যাচে পোল্যান্ডের বিপক্ষে নামলেই রেকর্ডটি হয়ে যাবে তার একার।আর্জেন্টিনার ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক ম্যারাডোনা বিশ্ব মঞ্চে ২১ ম্যাচ খেলে গোল করেছিলেন ৮টি। সৌদি আরব ম্যাচের পর মেক্সিকোর বিপক্ষেও জালের দেখা পেয়ে মেসিরও হয়ে গেল ৮ গোল। ১০ গোল নিয়ে আর্জেন্টাইনদের মধ্যে সবার ওপরে আছেন কেবল গাব্রিয়েল বাতিস্তুতা।
১৯৬৬ সালের টুর্নামেন্ট থেকে ধরে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে একই ম্যাচে গোল এবং গোলে সহায়তার কীর্তি মেসির আগে থেকেই। ২০০৬ আসরে সার্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে তিনি এই অর্জনে নাম লেখান ১৮ বছর ৩৫৭ দিন বয়সে। এবার সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবেও এই কীর্তি গড়লেন তিনি মেক্সিকোর বিপক্ষে, ৩৫ বছর ১৫৫ দিন।


বিশ্বকাপে নিজের সবশেষ চার ম্যাচেই গোলে সম্পৃক্ত থাকল মেসির নাম। গোল ও অ্যাসিস্ট, দুটোই সমান তিনটি করে।জাতীয় দলের হয়ে টানা ৬ ম্যাচে জালের দেখা পেলেন আর্জেন্টিনার রেকর্ড গোলস্কোরার। এমনটা করে দেখিয়েছিলেন তিনি আগেও একবার, ২০১১ সালের নভেম্বর থেকে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত


মেক্সিকোর বিপক্ষে অমন পারফরম্যান্সের পর ম্যাচের সেরা ফুটবলারও নির্বাচিত হন মেসি। বিশ্ব মঞ্চে অফিসিয়ালি কোনো খেলোয়াড়ের সবচেয়ে বেশি ম্যাচ সেরার পুরস্কার জয়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে যা যৌথভাবে সর্বোচ্চ।


কাতার আসরে পর্তুগালের প্রথম ম্যাচে সেরার পুরস্কার পাওয়ার দিনে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপের ভিন্ন পাঁচ আসরে গোল করার কীর্তি গড়েন রোনালদো। এবার প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ভিন্ন পাঁচ আসরে অ্যাসিস্ট এর কীর্তি গড়লেন মেসি।


আরও পড়ুন

ইংল্যান্ড-যুক্তরাষ্ট্রের ড্রয়ে জমে উঠল গ্রুপের লড়াই

বিশ্বকাপের সবচেয়ে দামি দল কোনটি

রিচার্লিসনের জোড়া গোলে সার্বিয়াকে উড়িয়ে বিশ্বকাপে দুর্দান্ত সূচনা ব্রাজিলের