করোনার বুস্টার ডোজ গ্রহণের ছয় মাস পর শরীরের অ্যান্টিবডি কমে আসে। পরীক্ষা করে শতভাগ টিকা গ্রহীতার শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেলেও তা গড়ে কমে ১০৬৭৫.৭ এইউ/এমএল নেমে আসে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এক গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে বিএসএমএমইউয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন গবেষণা দলের প্রধান ও হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সালাহউদ্দিন শাহ।তিনি জানান, বুস্টার ডোজের পরও চতুর্থ ডোজ বা দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ প্রয়োজন কিনা তা নিরূপণের এ গবেষণা করা হয়েছে।

গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, বুস্টার ডোজ নেওয়ার ১ মাস পরে শতভাগ অংশগ্রহণকারীদের দেহে অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়। এমনকি ৬ মাস পরেও শতভাগ অংশগ্রহণকারীদের দেহে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেলেও প্রায় সব ক্ষেত্রেই এর মাত্রা কমতে থাকে। আবার, এদের মধ্যে যাদের কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস রয়েছে; তাদের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবডির মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, গবেষণা ফলাফলে একটা ভালো বিষয় উঠে এসেছে। সে কারণে আমরা চাই সবাই করোনা টিকার আওতায় আসুক। দেশের প্রতিটি মানুষ সুস্থ থাকুক। অথচ এখন টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার মতো লোক নেই। আমরা লক্ষ্য করেছি, প্রচার-প্রচারণা বা ক্যাম্পেইন ছাড়া আসলে টিকা নেওয়ার জন্য লোকজন আসছে না। আমাদের কেন্দ্রে প্রতিদিন ৫ হাজার ডোজ দেওয়ার সক্ষমতা থাকলেও গড়ে এক হাজার মানুষও আসছে না। 

গবেষণা বিষয়ে উপাচার্য বলেন, গত এক মাস ১ম ও ২য় ডোজ করোনার টিকা গ্রহণকারী ২২৩ জনের ওপর পরিচালিত গবেষণায় ৯৮ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। তবে ৬ মাস পর অ্যান্টিবডির মাত্রা কমতে থাকে। তাদের মধ্যে ৭৩ শতাংশের অ্যান্টিবডির মাত্রা হ্রাস পেয়ে ৬৭৯২ এইউ/এমএল থেকে ৩৯৬৩ এইউ/এমএল পর্যন্ত নেমে এসেছে। এসময় ২ জনের শরীরে কোনও অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়নি। কিছু বুস্টার ডোজ গ্রহীতাদের শরীরে অ্যান্টিবডি আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে অ্যান্টিবডির মাত্রা ২০৮৭৮ এইউ/এমএল পর্যন্ত উঠে এসেছে। তবে ৬ মাস পরে তা কমে ১০৬৭৫.৭ এইউ/এমএল পর্যন্ত নেমে এসেছে। যাদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস রয়েছে তাদের মধ্যে অ্যান্টিবডির মাত্রা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এদের রক্তে হিমোগ্লোবিন ও প্লাটিলেটসহ অন্যান্য বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোনও পরিবর্তন দেখা যায়নি।