বণিক বার্তা: ২১.০৫.২০২২

মহামারীর শুরু থেকেই ব্যাপকহারে বাড়ছে ঋণের পরিমাণ।কভিডের বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে ঋণের দ্বারস্থ হয় সরকার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের এ সময়ে ঋণগ্রহণের প্রবণতা আরো বেড়েছে।এরই মধ্যে বৈশ্বিক ঋণ সর্বকালের সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছে।চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) শেষে সরকার ও অ-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০৫ লাখ কোটি (ট্রিলিয়ন) ডলারে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে মন্থর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মধ্যেও বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতি ব্যাপকহারে ঋণ নেয়া অব্যাহত রেখেছে। খবর দ্য ন্যাশনাল।

সম্প্রতি প্রকাশিত ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স (আইআইএফ) একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বছরের প্রথম তিন মাসে মোট ঋণ বেড়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলার। এ নিয়ে মোট ঋণের পরিমাণ ৩০৫ লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে।ঋণের পরিমাণ বাড়লেও মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) বিপরীতে বৈশ্বিক ঋণের অনুপাত নিম্নমুখী হয়েছে। জানুয়ারি-মার্চ সময়ে এ অনুপাত ৩৪৮ শতাংশে নেমেছে। এ হার গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে রেকর্ড সর্বোচ্চ থেকে প্রায় ১৫ শতাংশ পয়েন্ট কম।

এটিকে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির প্রভাব হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। এ নিয়ে টানা চতুর্থ প্রান্তিকে জিডিপি-টু-ঋণের অনুপাত নিম্নমুখী রয়েছে। এ হ্রাস বৃহৎ অর্থনীতিতে অনেক বেশি স্পষ্ট ছিল। গ্লোবাল ডেবট মনিটরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ফলে চলতি বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে মন্থর হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ শ্লথ প্রবৃদ্ধিতে রেকর্ড সর্বোচ্চ ঋণের পরিমাণও অবদান রাখবে।

এদিকে বৈশ্বিক ঋণ বেড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। বছরের প্রথম তিন মাসে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ বেড়েছে যথাক্রমে ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি ডলার ও ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি ডলার।যদিও ইউরো মুদ্রা ব্যবহার করা ১৯ দেশে ঋণের পরিমাণ টানা তৃতীয় প্রান্তিকের মতো কমেছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাদ দিয়ে করপোরেট খাতের ঋণ ও সরকারি ঋণ এ হিসাবের অন্তর্ভুক্ত। আর্থিক খাতের বাইরের ঋণ এখন ২৩৬ লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে।মহামারী শুরুর আগের চেয়ে এ ঋণের পরিমাণ প্রায় ৪০ লাখ কোটি ডলার বেশি। আইআইএফ জানিয়েছে, উদীয়মান অর্থনীতিতে ক্রমবর্ধমান ঋণ এখন রেকর্ড ১০০ লাখ কোটি ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে।তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস বৈশ্বিক ঋণ কমাতে এবং সাধারণভাবে ঋণের অনুপাত কমিয়ে আনতে সহায়তা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি কঠোর করার সঙ্গে সঙ্গে ঋণ নেয়ার খরচ বেড়ে যাবে।ফলে কমে যাবে ঋণ নেয়ার প্রবণতাও।

আর্থিক বাজার স্থিতিশীল এবং মহামারীর বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে প্রায় ২৫ লাখ কোটি ডলার আর্থিক ও মুদ্রানীতি সহায়তা দিয়েছে বিশ্বজুড়ে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ সহায়তা দিতে আর্থিক ঘাটতি মোকাবেলায় ঋণের দিকে ঝুঁকেছে সরকারগুলো।ঐতিহাসিক কম সুদের হার সরকার ও অ-আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো ঋণ নিতে উৎসাহিত করেছে। এ অবস্থায় ৪০ বছরের সর্বোচ্চ উচ্চতায় ওঠা মূল্যস্ফীতি কমাতে সুদের হার বাড়ানো শুরু করেছে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক।চলতি ও আগামী বছর সুদের হার বৃদ্ধি অব্যাহত রাখারও পরিকল্পনা করছে ফেডারেল রিজার্ভ। এটি উদীয়মান অর্থনীতির ঋণের খরচ বাড়িয়ে তুলবে।

মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী সরকারি ঋণ ১৪ শতাংশ পয়েন্ট বা ১৭ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলার বেড়ে বৈশ্বিক জিডিপির ১০৩ শতাংশে পৌঁছেছে

DISCLAIMER : Views expressed above are the author's own. The contents provided here are only for educational assistance & information purposes only. Information is provided without warranty and is to be used at the risk of the reader. All trademarks, logos and copyright issues are property of their respective owners. The creator of this page takes no responsibility for the way you use the information provided on this site.