জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের কান্ট্রি ইকোনমিস্ট ড. নাজনীন আহমেদ বলেছেন, বহিঃবিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই বাংলাদেশেরও চ্যাঞ্জেল রয়েছে। আমরা মূল্যস্ফীতি উর্ধ্বগতি দেখছি, বিশ্ববাজারে কিছু পণ্যের দাম কমে আসলেও এখনও বিশ্ববাজার দর স্থিতিশীল নয় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে। ইউরোপের বাজারও বেশ মন্দার মধ্যে রয়েছে। সব মিলিয়ে বিশ্ববাজারে অর্থনীতির যে অস্থিরতা তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে।

গত মাসে দেশের রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি আয় উভয়ই কমেছে। এর মধ্যেই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে দক্ষিণ এশিয়া ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এমন অবস্থায় বাংলাদেশের জন্য কি ধরনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় ড. নাজনীন আহমেদ  এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য ড. নাজনীন আহমেদ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক শান্ত সিংহ।

ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, বৈশ্বিক অর্থনীতি মন্দা হলেও বাংলাদেশের জন্য বিশেষ সুবিধা আছে। আমাদের প্রয়োজনীয় যে খাদ্য সামগ্রী যেমন, চাল, ডাল এসমস্ত পণ্য মূলত আমরা দেশেই উৎপাদন করি এবং এক্ষেত্রে আমরা স্বয়ং সম্পূর্ণ। আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য ধান আমরা নিজেরাই উৎপাদন করছি। সে বিবেচনায় খাদ্য নিরাপত্তার জায়গায় আমাদের সমস্যার হওয়ার সম্ভাবনা কম। এছাড়া আমাদের দেশে সামনে শীত আসছে। এ সময় দেশে প্রচুর পরিমাণে শীতকালীন শাক সবজির ফলন হয়। কাজেই খাদ্য নিরাপত্তার ব্যাপারে আমাদের ঝুঁকি কম।

বিশ্ব অর্থনীতির মূল্যস্ফীতির প্রভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে বর্তমান যে মূল্যস্ফীতি সেজন্য বাংলাদেশের সামনেও নানা চ্যাঞ্জেল আছে। ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে সারা বিশ্বেজুড়ে অর্থনীতি বেশ চাপের মুখে রয়েছে। এর প্রভাবও বাংলাদেশে পড়েছে। বিশ্ববাজারে যদি অর্থনৈতিক মন্দা হয় তাহলে আমাদের রপ্তানি চাহিদা কমবে। কারণ আমরা ইউরোপ এবং আমেরিকাতেই বেশি রপ্তানি করি। কাজেই তাদের অর্থনীতি যদি সচল না থাকে তাহলে আমাদের পণ্যের চাহিদা কমবে।

ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, আমাদের প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে বলে বিশ্বব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে সেটা ৬ শতাংশের কম নয়। যে কারণে আমরা কিছু সুবিধাজনক অবস্থানে আছি। এছাড়া আমাদের জন্য আরেকটি বড় সুবিধা হলো আমাদের নিজস্ব অর্থনীতি বেশ বড়। আমাদের এতো বেশি জনসংখ্যা যে, আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজার অনেক বড়। ফলে সেখানে বড় ধরনের বেচাকেনা হয়ে থাকে। আমাদের বড় জনবল আমাদের জন্য অনেক সুবিধার। অর্থাৎ বিপুল জনগোষ্ঠী আমাদের অর্থনতিকে শক্তিশালী করেছে।

 তিনি বলেন, গত মাসে রেমিট্যান্স হয়তো কিছুটা কমেছে। তবে সামনে রেমিট্যান্স বাড়বে। কারণ বিপুল সংখ্যক কর্মী বিশেষ করে নারী কর্মীরা তারাও এখন মধ্য প্রাচ্যে যাচ্ছেন। তারা গিয়েই তো টাকা পাঠাতে পারছে না। কিন্তু একটা সময় পর নিয়মিত পাঠানো শুরু করে। সুতরাং সামনে আমাদের রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়বে। 

 

সূত্র-শান্ত সিংহ

বাংলা ইনসাইডার